গ্রাস কার্প (বৈজ্ঞানিক নাম: Ctenopharyngodon idella) হলো একটি জনপ্রিয় স্বাদু পানির মাছ, যা মূলত পূর্ব এশিয়া থেকে উদ্ভূত। এটি কার্প পরিবারের একটি অংশ এবং সারা বিশ্বে বিশেষত অ্যাকুয়াকালচার (মাছ চাষ) এবং জলজ উদ্ভিদের নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যাপকভাবে পরিচিত। চীন,হংকং এবং রাশিয়ার আমুর নদীতে পাওয়া যায়। গ্রাসকার্প ১৯৫৯ সালে হংকং থেকে আমাদের দেশে আসে। গ্রাস কার্প দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং প্রধানত জলজ উদ্ভিদ খেয়ে বেঁচে থাকে, যার ফলে এটি উদ্ভিদ-নিয়ন্ত্রক মাছ হিসেবে বেশ কার্যকর।গ্রাস কার্পের শরীরের গঠন দেহ লম্বাটে, মোটা এবং আংশিকভাবে চাপা। এর শরীরের রঙ রুপালি-সবুজ, পিঠের অংশ কিছুটা গাঢ় সবুজ বা ধূসর। পাখনার রং সাধারণত স্বচ্ছ বা হালকা বাদামী।
গ্রাস কার্প প্রধানত জলজ উদ্ভিদ এবং শৈবাল খেয়ে বেঁচে থাকে। এই কারণে এটি পুকুর, হ্রদ বা জলাশয়ের উদ্ভিদ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
ছোট বয়সে এই মাছ কেঁচো বা অন্যান্য পোকামাকড়ও খেতে পারে, তবে পূর্ণবয়স্ক হওয়ার পর তারা জলজ উদ্ভিদ খাওয়ায় বেশি মনোযোগী হয়।
প্রাকৃতিক পরিবেশে গ্রাস কার্প বর্ষাকালে প্রজনন করে, বিশেষত নদীতে।
চাষের জন্য কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, যেখানে বিশেষ হ্যাচারিতে গ্রাস কার্পের ডিম থেকে পোনা উৎপাদন করা হয়। গ্রাস কার্প খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং ভালো পরিবেশে ২-৩ বছর বয়সে ১০-১৫ কেজি ওজনের হতে পারে। উপযুক্ত পরিবেশে মাছের দৈর্ঘ্য ১-১.৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে।
গ্রাস কার্প বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক মাছ, কারণ এটি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং মাছ চাষে উদ্ভিদ নিয়ন্ত্রণের জন্য এটি ব্যবহৃত হয়।
এই মাছের মাংস সাদা, মসৃণ এবং সুস্বাদু, যা মানুষের খাদ্য হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয়।
মাছের পাশাপাশি এটি জলাশয়ে অবাঞ্ছিত উদ্ভিদ নিয়ন্ত্রণেও ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে পুকুর বা হ্রদে অতিরিক্ত শৈবাল বা অন্যান্য জলজ উদ্ভিদ থাকলে।